ক্রিপ্টোকারেন্সি আধুনিক আর্থিক বা ফাইন্যান্সিয়াল বিশ্বের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। এঁরা ডিজিটাল স্পেসে অর্থের ঐতিহ্যগত মডেল, আর্থিক বা ফাইন্যান্সিয়াল লেনদেনের এবং মিথস্ক্রিয়ার আন্তসংযোগ তৈরি করার জন্যে পরিবর্তন করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে। এই নিবন্ধে বা আর্টিকেলের মধ্যে আমরা ক্রিপ্টোকারেন্সির অন্তর্নিহিত মৌলিক নীতিমালাগুলো, প্রযুক্তির টেকনোলজিগুলো এবং মূল ধারণাগুলিকে বা আইডিয়াগুলোকে দেখবো।
ক্রিপ্টোকারেন্সি বিকাশের পর্যায়গুলি
ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলি এঁদের সূচনার শুরু থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে হয়ে বিপুল সংখ্যক পরিবর্তনগুলো করেছে।
২০০৯ সালে, সাতোশি নাকামোটো Bitcoin — বিটকয়েন প্রকাশ করে থাকে, যেটি প্রথম বিকেন্দ্রীভূত ক্রিপ্টোকারেন্সি। এই মুহূর্তটি ডিজিটাল ফাইন্যান্সের একটি নতুন যুগের সূচনা করেছে। Bitcoin বিটকয়েনের অন্তর্নিহিত ব্লকচেইন প্রযুক্তির টেকনোলজি লেনদেনের নিরাপত্তার স্বার্থে সিকিউরিটিসহ এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিতভাবেই কনফার্ম করার জন্যে একটি সমাধান দিয়েছে। Bitcoin বিটকয়েনের সাফল্যের পর, বিকল্প ক্রিপ্টোকারেন্সি বা আল্টকয়েনগুলো, যেমন Litecoin লাইটকয়েন, Ripple রিপল এবং Dogecoin ডোজকয়েন আবির্ভূত হতে শুরু করে। এই প্রকল্পগুলি বিদ্যমান সমাধানগুলিকে উন্নত করে থাকে এবং দ্রুতগতির সুপার স্পিডে লেনদেনের সময় এবং বিভিন্ন ঐক্যমত্য প্রক্রিয়ার মতো নতুন বৈশিষ্ট্যগুলিকে প্রবর্তন বা পেশ বা লঞ্চ করে বাস্তবায়ন উদ্ভাবন করেছে।
২০১৫ সালে, Ethereum ইথেরিয়াম চালু বা লঞ্চ করা হয়েছিলো, যাকিনা স্মার্ট চুক্তির মাধ্যমে কন্ট্র্যাকের ধারণাটিকে বা আইডিয়াটিকে চালু বা লঞ্চ করেছিলো - যেটি একটি ব্লকচেইনে চলমান প্রোগ্রামযোগ্য চুক্তির মাধ্যমে কন্ট্র্যাক। এই উদ্ভাবনটি বিকেন্দ্রীভূত অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে অ্যাপটি (dApps) তৈরি করতে সক্ষম করে থাকে এবং DeFi (বিকেন্দ্রীভূত অর্থ) ইকোসিস্টেমের বৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করে থাকে।
২০১৭ সালে ক্রিপ্টোকারেন্সির প্রতি ব্যাপক আগ্রহের একটি বছর ছিলো, Bitcoin বিটকয়েন প্রায় $২০,০০০-এর সর্বকালের সর্বোচ্চে পৌঁছেছিলো। একই সময়ে, ICO (Initial Coin Offering) (প্রাথমিক মুদ্রা বা কয়েন অফার) বুম শুরু করা হয়েছিলো, যখন প্রকল্পগুলি তহবিলের অর্থ বা টাকা সংগ্রহের জন্যে বিক্রির জন্য তাঁদের টোকেনগুলোকে রাখে। এর ফলে অনেক প্রতারণামূলক পরিকল্পনার উদ্ভবও হয়েছে।
দ্রুতগতির বৃদ্ধির পরে, ক্রিপ্টোকারেন্সি বাজারটি পতনের সম্মুখীন হয়েছে। বিশ্বজুড়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলির বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা এবং জালিয়াতি রোধ করতে নিয়মাবলী বা রুলগুলো ও প্রবিধানগুলো প্রবর্তন বা পেশ বা বাস্তবায়ন করা শুরু করেছে৷ এটি আরোও ভালোভাবে প্রকল্পগুলো তৈরি করতে এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তির টেকনোলজির বোঝার স্তর বা লেবেল বাড়ানোর জন্যে একটি প্রণোদনা হয়ে উঠেছে। COVID-19 মহামারী শুরু হওয়ার সাথে সাথেই ক্রিপ্টোকারেন্সির প্রতি আগ্রহ আবারো জড়োসড়ো হয়ে বেড়েছে। এই সময়ে, DeFi এবং NFTs (নন-ফাংশনাল টোকেন) জনপ্রিয় প্রবণতার মধ্যে ট্রেন্ড হয়ে ওঠেছে, যা বিপুল পরিমাণে বিনিয়োগের মাধ্যমে ইনভেস্টমেন্ট করতে এবং মিডিয়ার মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। কোম্পানিগুলো তাঁদের ব্যবসায়িক মডেলে ব্লকচেইন প্রযুক্তির টেকনোলজি প্রয়োগ করতে শুরু করেছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, ঐতিহ্যগত আর্থিক বা ফাইন্যান্সিয়াল ব্যবস্থার সাথে ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলির একটি ক্রমবর্ধমানভাবে সক্রিয়ভাবে এ্যাকটিভ হয়ে একীকরণ হয়েছে। আর্থিক বা ফাইন্যান্সিয়াল প্রতিষ্ঠানগুলি ক্রিপ্টোকারেন্সি পরিষেবাগুলির সার্ভিসগুলোর অফার করতে শুরু করেছে, এবং বিকেন্দ্রীকরণের উপর ভিত্তি করে Web3-ওয়েব৩ এর ধারণাটি বা আইডিয়াটি আরোও বেশি গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করছে৷
ক্রিপ্টোকারেন্সির মূলনীতিগুলো।
১) বিকেন্দ্রীকরণ।
ক্রিপ্টোকারেন্সির অন্যতম প্রধানতম বৈশিষ্ট্যটি হলো তাঁদের বিকেন্দ্রীভূত প্রকৃতিটা। প্রথাগত মুদ্রার বা কয়েনের বিপরীতে, যেটি কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং সরকার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে, ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলিকে বিতরণ করা নেটওয়ার্কগুলিতে কাজ করে থাকে। এর মানেটা হলো যে, এমন কোনো একক গভর্নিং বডি নেই যা ক্রিপ্টোকারেন্সির মান বা প্রাপ্যতাকে প্রভাবিত করতে পারবে। বিকেন্দ্রীকরণ ম্যানিপুলেশনের জন্যে বৃহত্তর নির্ভরযোগ্যতা এবং প্রতিরোধ প্রদান করে থাকে।
২) নিরাপত্তার স্বার্থে সিকিউরিটিসহ এবং ক্রিপ্টোগ্রাফি।
লেনদেনের এবং ব্যবহারকারীর বা ইউজারের ডেটার নিরাপত্তার স্বার্থে সিকিউরিটি নিশ্চিতভাবেই কনফার্ম করতে ক্রিপ্টোকারেন্সি জটিলতার ক্রিপ্টোগ্রাফিক কৌশলগত সূত্র বা স্ট্যাডেজি ব্যবহার করে থাকে। প্রতিটি ব্যবহারকারীর বা ইউজারের একটি অনন্য ও ইউনিক কীই বা চাবি (ঠিকানার এড্রেসটি) থাকে, যাকিনা তহবিলের অর্থ বা টাকা প্রেরণ এবং গ্রহণ করার জন্যে প্রয়োজনীয়। ক্রিপ্টোগ্রাফি তথ্যকে অননুমোদিত অ্যাক্সেস এবং জালিয়াতি থেকে রক্ষা করে থাকে। এটি নেটওয়ার্ক অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে আস্থার মাত্রাটিকে বাড়ায়।
৩) স্বচ্ছতা এবং অপরিবর্তনীয়তা।
ক্রিপ্টোকারেন্সির সাথে সমস্ত লেনদেনগুলো ব্লকচেইনে রেকর্ড করা হয়ে থাকে - এটি একটি বিতরণকৃত রেজিস্ট্রি যাকিনা সমস্ত নেটওয়ার্ক অংশগ্রহণকারীদের অ্যাক্সেসযোগ্য। এটি একটি উচ্চপর্যায়ের স্তরের বা লেবেলের স্বচ্ছতা প্রদান করে থাকে: যে কেউ লেনদেনের ইতিহাসের হিস্ট্রোরি দেখতে পারবে। উপরন্তু, ব্লকচেইনের ডেটাগুলো অপরিবর্তনীয়: একবার নিশ্চিতভাবেই কনফার্ম হয়ে গেলে, লেনদেনগুলো পরিবর্তন বা মুছে ফেলা যাবে না, যেটি জালিয়াতির সম্ভাবনাকে দূর করে থাকে।
৪) বেনামী এবং গোপনীয়তা।
অনেক ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারকারীদের বা ইউজারদের একটি নির্দিষ্ট স্তরের বা লেবেলের বেনামী অফার করে থাকে। যদিও ব্লকচেইনে সমস্ত লেনদেন দৃশ্যমান, ব্যবহারকারীদের বা ইউজারদের ঠিকানার এড্রেস তাঁদের ব্যক্তিগত তথ্যের সাথে লিঙ্ক করা হয় না। এটি গোপনীয়তার জন্যে মঞ্জুরি দিয়ে থাকে, কিন্তু এই নাম প্রকাশ না করা অবৈধ কার্যকলাপের জন্যে ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহার করার সম্ভাবনা সম্পর্কেও প্রশ্নগুলোকে উত্থাপন করে থাকে।
ক্রিপ্টোকারেন্সির মূল নীতিগুলিকে বোঝা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ যে কেউ এই ক্ষেত্রটিকে বুঝতে চায়। এই নীতিগুলি ডিজিটাল সম্পদের রির্সোসগুলোর নির্ভরযোগ্যতা, নিরাপত্তার স্বার্থে সিকিউরিটিসহ এবং দক্ষতাগুলোকে নিশ্চিতভাবেই কনফার্ম করে থাকে এবং ব্যবসা ও আর্থিক বা ফাইন্যান্সিয়াল পরিষেবাগুলির সার্ভিসগুলোর জন্যে নতুন সুযোগ-সুবিধাগুলো উন্মুক্ত করে থাকে৷ যাইহোক, আপনি ক্রিপ্টোকারেন্সির সাথে ইন্টারঅ্যাক্ট করার পরিকল্পনার প্ল্যান তৈরি করছেন - বিনিয়োগের মাধ্যমে ইনভেস্টমেন্ট, ট্রেডিং বা বিকেন্দ্রীভূত অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করার মাধ্যমেই - এই মৌলিক বিষয়গুলিকে জানা আপনাকে ক্রিপ্টোকারেন্সির দ্রুতগতির পরিবর্তনশীল বিশ্বে আরোও ভালোভাবে নেভিগেট করতে সাহায্য করবে৷
ক্রিপ্টোকারেন্সির পিছনে প্রযুক্তির টেকনোলজিগুলো।
১. ব্লকচেইন।
ব্লকচেইন হলো অন্তর্নিহিত প্রযুক্তির টেকনোলজি যার উপরে অধিকাংশ ক্রিপ্টোকারেন্সি ভিত্তিক। এটি একটি বিতরণ করা খাতা যা একটি ব্লকচেইনের সমস্ত লেনদেনের তথ্যাবলীসমূহকে রেকর্ড করে থাকে। প্রতিটি ব্লকে লেনদেনের তথ্যগুলো, টাইমস্ট্যাম্পগুলো এবং আগের ব্লকের একটি হ্যাশগুলো থাকে। ব্লকচেইনের স্বচ্ছতা, নিরাপত্তার স্বার্থে সিকিউরিটি এবং বিকেন্দ্রীকরণ প্রদান করে থাকে কারণ লেজারের কপি বিশ্বজুড়ে একাধিক কম্পিউটারে (নোডগুলো) সংরক্ষণ করা হয়ে থাকে।
২. ক্রিপ্টোগ্রাফি।
ক্রিপ্টোগ্রাফি হলো ক্রিপ্টোকারেন্সির নিরাপত্তার ভিত্তি। এটি ডেটাগুলোর গোপনীয়তার নীতিমালা এবং অখণ্ডতা নিশ্চিতভাবেই কনফার্ম করতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। প্রতিটি ব্যবহারকারীর বা ইউজারের একটি অনন্য ও ইউনিক সার্বজনীন এবং ব্যক্তিগত কীই বা চাবি রয়েছে যা তাঁদের তহবিলের অ্যাক্সেস রক্ষা করে থাকে। ক্রিপ্টোগ্রাফিক হ্যাশগুলি অনন্য ও ইউনিক ব্লকগুলো শনাক্তকারী তৈরি করতে এবং লেনদেন যাচাই করতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে, জালিয়াতি বা জালিয়াতির সম্ভাবনাগুলো দূর করে থাকে।
৩. স্মার্ট কন্ট্র্যাকগুলো।
স্মার্ট কন্ট্রাক্টগুলো হলো প্রোগ্রামেবল চুক্তির মাধ্যমে কন্ট্র্যাক যাকিনা নির্দিষ্ট শর্তাবলী পূরণ হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অটোমেটিক কার্যকরী হয়ে যায়। এঁরা আপনাকে বিকেন্দ্রীভূত অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে অ্যাপটি (dApps) তৈরি করতে এবং ব্যবসায়িক প্রক্রিয়াগুলিকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অটো করার অনুমতি দিয়ে থাকে। স্মার্ট চুক্তিগুলির মাধ্যমে কন্ট্র্যাকগুলো Ethereum- ইথেরিয়াম এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলিতে চলে থাকে এবং উচ্চ স্তরের বা লেবেলের বিশ্বাস প্রদান করে থাকে কারণ সমস্ত ক্রিয়াকলাপের কার্যক্রম ব্লকচেইনে রেকর্ড করা হয়ে থাকে।
৪. মাইনিং এবং ঐক্যমত্য অ্যালগরিদম।
মাইনিং হলো লেনদেনগুলোর যাচাই-বাছাই ও নিশ্চিতভাবেই কনফার্ম করার প্রক্রিয়া যা নেটওয়ার্কের নিরাপত্তার স্বার্থে সিকিউরিটি নিশ্চিতভাবেই কনফার্ম করে থাকে। মাইনিং করার শ্রমিকেরা তাঁদের কম্পিউটার সিস্টেমের কম্পিউটিং শক্তি বা এ্যানার্জী ব্যবহার করে জটিলতার সমস্যার সমাধান করে থাকে এবং ফলস্বরূপ পুরস্কারগুলো পায়। Proof-of-Work প্রুফ-অফ-ওয়ার্ক (PoW) এবং Proof-of-Steak প্রুফ-অফ-স্টেক (PoS) এর মতোই করে বিভিন্ন সম্মতিমূলক অ্যালগরিদম রয়েছে, যেটি নির্ধারণ করে থাকে কিভাবে করে লেনদেনগুলোকে যাচাই করা হয়ে থাকে এবং ব্লকচেইনে নতুন ব্লকগুলোকে যুক্ত করা হয়ে থাকে। এই অ্যালগরিদমগুলি ক্রিপ্টোকারেন্সির বিকেন্দ্রীভূত প্রকৃতিটা বজায় রাখতে একটি মূল ভূমিকা পালন করে থাকে।
৫. বিকেন্দ্রীভূত অর্থ (DeFi)
বিকেন্দ্রীভূত অর্থ হলো একটি নতুন ধারণাটি বা আইডিয়াটি যাকিনা প্রথাগত ব্যাঙ্ক এবং আর্থিক বা ফাইন্যান্সিয়াল প্রতিষ্ঠানের সম্পৃক্ততা ছাড়াই আর্থিক বা ফাইন্যান্সিয়াল পরিষেবার সেবাটির সার্ভিস তৈরি করতে ব্লকচেইন এবং স্মার্ট চুক্তির মাধ্যমে কন্ট্র্যাক ব্যবহার করে থাকে। DeFi প্রকল্পগুলি ব্যবহারকারীদের বা ইউজারদের অর্থ বা টাকা ধার করতে, বিনিময়ের এক্সচেঞ্জ পরিচালনা করতে, সুদ অর্জন করতে এবং তরলতায় অংশগ্রহণ করতে দিয়ে থাকে, সবই কোনো ধরনের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ব্যাক্তিটি ছাড়াই৷ এটি আমাদের অর্থের বা টাকার সাথে যোগাযোগ করার উপায়ে বিপ্লব ঘটাচ্ছে এবং আরোও বৃহত্তর দর্শকদের কাছে আর্থিক বা ফাইন্যান্সিয়াল পরিষেবাগুলিতে বা সার্ভিসের অ্যাক্সেস উন্মুক্ত করছে।
৬. টোকেন এবং NFTs
টোকেন হলো ডিজিটাল সম্পদের রির্সোস যা বিভিন্ন মানের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে এবং ব্লকচেইনে বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যেতে পারবে। এগুলি পরিষেবাগুলির সার্ভিসগুলোতে অ্যাক্সেস করতে, ভোটদানে অংশ নিতে বা নির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্মের মধ্যে বিনিময়ের এক্সচেঞ্জ করতে মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। নন-ফাঞ্জিবল টোকেন (NFTs) হলো অনন্য ও ইউনিক ডিজিটাল সম্পদের রির্সোস যা শিল্প বা সঙ্গীতের মতোই করে নির্দিষ্ট আইটেমগুলির মালিকানা প্রদান করে থাকে এবং স্মার্ট চুক্তির মাধ্যমে কন্ট্র্যাকের নীতির উপর ভিত্তি করে থাকে।
ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলির পিছনের প্রযুক্তিগুলি তাঁদের ফাংশনাল কার্যকারিতা এবং বিকাশের জন্যে মৌলিক বা বেসিক। ব্লকচেইন, ক্রিপ্টোগ্রাফি, মাইনিং এবং স্মার্ট কন্ট্রাক্ট একটি জটিলতম ইকোসিস্টেম গঠন করে থাকে যার প্রতিটি অংশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এই প্রযুক্তিগুলির টেকনোলজিটিকে বোঝা আপনাকে কেবলমাত্র ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলির বিশ্বকে আরোও ভালোভাবে বুঝতে সহায়তা করবে না, তবে উদ্ভাবনের জন্যে নতুন দিগন্ত এবং এঁরা যে সুযোগগুলিকে সরবরাহ করবে তাও খুলে দেবে৷ ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং তাঁদের প্রযুক্তিগুলির টেকনোলজিগুলো ক্রমাগতভাবে বিকশিত হতে থাকে, এবং সাম্প্রতিক প্রবণতাগুলির ট্রেন্ডগুলোর সাথে আপ টু ডেট থাকা আপনাকে তাঁদের সাথে আপনার মিথস্ক্রিয়ায় হয়ে আন্তসংযোগের সহজতম উপায়ে জ্ঞাত সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে৷
ক্রিপ্টোকারেন্সি হলো একটি উত্তেজনাপূর্ণ এবং গতিশীল প্রবণতার মধ্যে ট্রেন্ড যাকিনা আর্থিক বা ফাইন্যান্সিয়াল ব্যবস্থা এবং আর্থিক বা ফাইন্যান্সিয়াল যন্ত্রগুলির সম্পর্কে আমাদের চিন্তাভাবনাকে আমূল পরিবর্তন করছে। ক্রিপ্টোকারেন্সির মূল বিষয়গুলিকে বোঝা, এঁরা কিভাবে করে কাজ করে থাকে এবং তাঁদের পিছনের প্রযুক্তিগুলির টেকনোলজির ডিজিটাল সম্পদের রির্সোসগুলোর জন্যে এই নতুন বিশ্বে সফলভাবে নেভিগেট করার মূল চাবিকাঠি। আপনি বিনিয়োগের মাধ্যমে ইনভেস্টমেন্ট করতে, বিকাশে আগ্রহী হোন বা ক্রিপ্টো সম্পর্কে আরোও জানতে চাঁন, এই ধারণাগুলি বা আইডিয়াগুলোর ক্রিপ্টোকারেন্সির জগতে আপনার অব্যাহত শিক্ষা এবং নিমজ্জনের ভিত্তি তৈরি করবে।
ক্রিপ্টোকারেন্সির ভবিষ্যতের চমৎকার ফিউচার: ১০ বছর সামনের দিকে তাকিয়ে দেখি।
অস্থিরতা এবং অনিশ্চয়তা থাকা সত্ত্বেও, আমরা আগামী দশকে এই স্থানটিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আশা করতে পারছি। আসুন ২০৩৪ সাল পর্যন্ত ক্রিপ্টোকারেন্সির ভবিষ্যতকে প্রভাবিত করতে পারবে এমন মূল প্রবণতাগুলির ট্রেন্ডগুলোর সম্পর্কিত বিষয়গুলোকে দেখুন।
পরবর্তী দশকে, আমরা সম্ভবত অর্থপ্রদানের প্রাথমিক উপায়টি হিসাবে ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলিকে ব্যাপকভাবে গ্রহণ করতে দেখবো। বড়ো ও বৃহত্তর কোম্পানিগুলো এবং খুচরা বিক্রেতারা সক্রিয়ভাবে এ্যাকটিভ হয়ে ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলিকে অর্থপ্রদানের উপায় হিসাবে গ্রহণ করতে শুরু করবে, যেটি ব্লকচেইন প্রযুক্তির টেকনোলজির ব্যবহার বৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করবে। অর্থপ্রদানের প্রক্রিয়াগুলি সহজতম এবং দ্রুততর হবে এবং ব্যবহারকারীদের বা ইউজারদের আরোও পছন্দের অপশন থাকবে৷
ক্রিপ্টোকারেন্সি জনপ্রিয়তা বাড়ার সাথে সাথে বিশ্বব্যাপী নিয়ন্ত্রকগণ তাঁদের ব্যবহার সংক্রান্ত আইন ও প্রবিধানগুলো তৈরি করতে থাকবে। উন্নত মানের নিয়ন্ত্রণ ভোক্তাদের সুরক্ষা প্রদান করবে এবং ডিজিটাল সম্পদের রির্সোসগুলোর প্রতি আস্থা বাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে। স্বচ্ছতা একটি উচ্চপর্যায়ের অগ্রাধিকার হবে, যাকিনা বাজারের মধ্যে জালিয়াতি এবং কারসাজি কমাতে সাহায্য করতে পারবে।
রিয়েল এস্টেটগুলো, আর্টওয়ার্কগুলো এবং অন্যান্য মূল্যবান আইটেমের সম্ভবত টোকেনাইজ করা হবে এবং ব্লকচেইনে ডিজিটাল সম্পদের রির্সোসগুলো হিসাবে উপস্থাপন করা হবে। এটি বিনিয়োগের মাধ্যমে ইনভেস্টমেন্ট করার অ্যাক্সেসের একটি নতুন স্তর বা লেবেল তৈরি করবে এবং অল্প পুঁজির লোকেদের এমন সম্পদে বিনিয়োগের মাধ্যমে ইনভেস্টমেন্ট করার অনুমতি দেবে যা আগে বেশিরভাগেরই কাছে অ্যাক্সেসযোগ্য ছিলো না।
DeFi প্ল্যাটফর্মগুলি যেগুলি কোনো ধরনের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ব্যাক্তি ছাড়াই আর্থিক বা ফাইন্যান্সিয়াল পরিষেবাগুলির সার্ভিসগুলো অফার করে থাকে তা বিকাশ অব্যাহত থাকবে। ভবিষ্যতে, আমরা সম্ভবত ঋণ, আমানত এবং বিনিময়ের মাধ্যমে এক্সচেঞ্জ করার জন্যে আরোও নিরাপদ এবং সহজেই ব্যবহারযোগ্য সমাধান দেখতে পাবো। DeFi নতুন আর্থিক বা ফাইন্যান্সিয়াল ব্যবস্থা এবং সরঞ্জামগুলির ভিত্তি হয়ে উঠতে পারে যা তাঁদের ভৌগলিক অবস্থান নির্বিশেষে অনেক লোকেদের কাছে অ্যাক্সেসযোগ্য হবে।
ব্লকচেইন প্রযুক্তির টেকনোলজি উন্নত হতে থাকবে। নতুন প্রোটোকল এবং স্কেলেবিলিটি সলিউশন যেমন লেয়ার টু লেয়ারগুলি লেনদেনগুলিকে দ্রুততম এবং সস্তা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এটি ক্রিয়াকলাপের কার্যক্রমের বৃহত্তর গতির স্পীড এবং দক্ষতাগুলো নিশ্চিতভাবেই কনফার্ম করবে, যা বাজারের মধ্যে নতুন অংশগ্রহণকারীদেরকে আকৃষ্ট করবে।
ক্রিপ্টোকারেন্সি অর্থনৈতিক বৈষম্য মোকাবেলার জন্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারবে। অস্থির অর্থনীতির দেশগুলিতে বা ঐতিহ্যবাহী ব্যাঙ্কিং পরিষেবাগুলিতে বা সার্ভিসের সীমিতসংখ্যক লিমিটেড অ্যাক্সেস রয়েছে, ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলি বিশ্ব অর্থনীতিতে অংশগ্রহণের নতুন সুযোগগুলো দিয়ে থাকে। একটি সম্পূর্ণ নতুন প্রজন্মের ব্যবহারকারী বা ইউজার আর্থিক বা ফাইন্যান্সিয়াল পণ্যগুলি অ্যাক্সেস করতে সক্ষম হবে যা আগে অনুপলব্ধ ছিলো।
ক্রিপ্টোকারেন্সির ভবিষ্যৎ উত্তেজনাপূর্ণ হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে, কিন্তু যেকোনো গতিশীল ক্ষেত্রের মতোই ঝুঁকিপূর্ণ রিক্সগুলো ও অনিশ্চয়তা রয়েছে। শুধুমাত্র সুযোগগুলিকে পুঁজি করেই নয়, ক্রিপ্টোকারেন্সির নিরাপদ এবং দায়িত্বশীল ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্যে নতুন চ্যালেঞ্জগুলি শেখা এবং মানিয়ে নেওয়া চালিয়ে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরবর্তী ১০ বছরে, আমরা সম্ভবত ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলিকে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠতে দেখবো, অর্থের সাথে আমাদের যোগাযোগের উপায় পরিবর্তন করে থাকে।